| ১৮ এপ্রিল ২০২০ | ২:৩২ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক : জয়পুরহাটে চলতি মৌসুমের আলুর মাড়াই কার্যক্রম সমাপ্ত হয়েছে। চলতি ২০১৯-২০ মৌসুমে আলুর উৎপাদন হয়েছে ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৭শ মেট্রিক টন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০১৯-২০ মৌসুমে জেলায় ৩৭ হাজার ৯১৭ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হলেও চাষ হয়েছে ৩৮ হাজার ৩২৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪০৮ হেক্টর অতিরিক্ত। এতে আলুর উপাদন হয়েছে ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৭শ মেট্রিক টন।
জয়পুরহাট জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমাণ জমিতে আলুর চাষ হয়ে থাকে। গত বছর ৪২ হাজার ৫শ ৩০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। এতে আলু উৎপাদন হয় ৮ লাখ ১৫ হাজার মে, টন। ফলন ভাল হওয়ায় জেলায় গ্যানোলা, মিউজিকা, ডায়মন্ড, এস্টোরিকস, কার্ডিনাল, ও রোজেটা জাতের আলু বেশি চাষ করে থাকেন কৃষকরা। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে এই আলু সরবরাহ করা হয়।
তরকারির জন্য উৎকৃষ্ট মানের কৃষি পণ্য হচ্ছে আলু। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা। মাটির গুণাগুন অনুযায়ী জয়পুরহাটের মাটি আলু চাষের জন্য উত্তম। আলু চাষের উপযোগী আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক কোন সমস্যা না থাকায় এবারে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। আলুর দাম ভাল পাওয়ায় কৃষকরাও খুশি। আলু সংরক্ষণের জন্য প্রায় দেড় লাখ মে. টন ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন জেলার ১৬ টি কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে ।
কৃষি বিভাগ আরো জানায়, জেলায় আলু চাষ সফল করতে কৃষক পর্যায়ে প্রশিক্ষণসহ উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করে। বিএডিসির পক্ষ থেকে কৃষকদের মাঝে উন্নত জাতের আলু বীজ সরবরাহ করা হয় এবং ফেব্রুয়ারি মাসে জেলার উপর দিয়ে বয়ে চলা শৈত্য প্রবাহে আলু ক্ষেতের যাতে ক্ষতি না হয় সে জন্য কৃষক পর্যায়ে পরামর্শ প্রদান করার পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক তদারকি করেন বলে জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ স ম মেফতাহুল বারি। অন্যান্য বছর আলু তোলার সময় দাম কমে ৬/৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এবার বাজারে আলু প্রকার ভেদে ২০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত কেজি বিক্রি হওয়ায় কৃষকরা খুশি বলেও জানান তিনি।
কৃষি বিভাগ জানায়, জয়পুরহাটের আলু উন্নত মানের হওয়ায় দেশের গন্ডি পেরিয়ে ৯ টি দেশে রপ্তানি করা হয়ে থাকে। দেশ গুলো হচ্ছে মালেশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, কুয়েত, নেপাল ও রাশিয়া। এবারও আলু তোলার পরেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় আলু সরবরাহ করার পাশাপাশি দেশের বাইরে আলু সরবরাহ করার প্রক্রিয়া শুরু হলেও করোনাভাইরাসের কারণে বহিঃবিশ্বে যোগাযোগ বন্ধ হওয়ায় আর আলু পাঠানো সম্ভব হয়নি তবে কাঁচা মাল হিসাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে এখন আলু যাচ্ছে। এ ছাড়াও সরকারের খাদ্য সামগ্রীর সঙ্গে আলুও বিতরণ করায় বাজারে আলুর দাম স্বাবাভিক রয়েছে।