| ১২ এপ্রিল ২০২০ | ১২:১০ অপরাহ্ণ
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য দেয়া বরাদ্দ যেন সঠিক ব্যবহার হয়, তা নিশ্চিত করতে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে কোনো রকম অনিয়ম ও নয়ছয় বরদাস্ত না করার কথাও উচ্চারণ করেছেন তিনি। গত মাসে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে, করোনা পরিস্থিতি ও প্রণোদনা ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে এবং সর্বশেষ চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নিয়েও এমন কথা বলেন তিনি। কিন্তু এরপরও থেমে নেই ত্রাণের জন্য বরাদ্দ দেয়া সরকারি চাল চুরির ঘটনা।
ত্রাণের চাল চুরি, বিতরণে অনিয়ম ও আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের তৎপরতা জোরদারের দাবি জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ। দলটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বারবার কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণের পরও করোনা ভাইরাস সংকটকালে লকডাউন পরিস্থিতিতে হঠাৎ কর্মহীন নিরুপায় অসহায় মানুষের জন্য সরকার যে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি নিয়েছে, সেই কর্মসূচি বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে অনেক জায়গাতেই প্রকৃত খাদ্য সহায়তা প্রার্থীর তালিকা প্রণয়ন ও খাদ্য বিতরণে সমন্বয়হীনতা, দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি ও দলীয়করণ হয়েছে। ওএমএসের চাল কালোবাজারে বিক্রি, ত্রাণের চাল আত্মসাৎ ও চুরি এবং মজুদদারির ঘটনার খবর আসছে। মুখ না দেখে এসব দুর্নীতিবাজ, চোর, আত্মসাৎকারী, কালোবাজারি, মজুতদারদের মোবাইল কোর্টে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
একের পর এক এ ধরনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডও। দলটির সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল এ বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ত্রাণ বিতরণে কোনো ধরনের অনিয়ম সহ্য করা হবে না। খেটে খাওয়া মানুষের ত্রাণ নিয়ে যারাই ছিনিমিনি খেলবে, তারা যে-ই হোক কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
আর দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ত্রাণ আত্মসাৎকারীদের জানোয়ার আখ্যা দিয়ে বলেছেন, অসহায় মানুষের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত চাল যারা আত্মসাৎ করছে, কারা এসব অমানুষ? যারা এই রোগের সময়ও এই অসহায় মানুষের ত্রাণ আত্মসাৎ করতে পারে? এদের মানুষ বলা যায় না, এরা মানুষরূপী জানোয়ার। এদের প্রতি আমি তীব্র ঘৃণা ও নিন্দা জানাচ্ছি। হানিফ বলেন, প্রশাসনকে অনুরোধ করব, আপনাদের উপজেলা পর্যায়ের সব কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিন। এই ত্রাণ যাতে কেউ আত্মসাৎ করতে না পারে, সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নিন। যদি কোনো ব্যক্তি বা জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে ত্রাণ আত্মসাতের, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। ত্রাণ জালিয়াতি আমরা বরদাস্ত করব না। আমরা কঠোরভাবে এটা দমন করতে চাই।
আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতা ত্রাণ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা দেয়ার পর গতকাল বিকালে ত্রাণ নিয়ে অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা ও আইনি ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সেইসঙ্গে এ ঘটনায় যেসব জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের যেসব কর্মী জড়িত, তাদের বরখাস্তের পাশাপশি আইনের আওতায় আনার কথাও বলা হয়েছে। বিকালে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম এক ভিডিও বার্তায় এ নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে একটি অফিস আদেশ জারি করার কথাও জানান তিনি। আদেশটি জেলা প্রশাসকদের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিদেরও তৃণমূল পর্যায়ে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কাজে সরাসরি সম্পৃক্ত করা হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জানা যায়, কোথাও কোথাও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। এরূপ অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাময়িক বরখাস্তসহ তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রুজু ও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র | শনি | রবি |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ||
৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ |
১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ |
২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ |
২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |