| ০৭ এপ্রিল ২০২১ | ১১:২৯ পূর্বাহ্ণ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের অভিজাত রয়েল রিসোর্টে মামুনুল হকের সঙ্গে অবস্থান করা ওই নারীর সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। গত রবিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে প্রতিবাদ সমাবেশে স্পর্শকাতর এই বিষয়টি নিয়ে দায়সারা বক্তব্য দেওয়া এবং সবশেষ হাফেজ শহীদুল ইসলাম ও জান্নাত আরা ঝর্ণার বড় সন্তান আবদুর রহমানের ভিডিওবার্তা এই আলোচনায় যেন আগুনে ঘি ঢালার মতো অবস্থার সৃষ্টি করেছে। তবে হঠাৎ করে বাবা হাফেজ শহীদ ও আবদুর রহমানকে খুঁজে না পাওয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের দাবি, ঘটনার প্রকৃত চিত্র তারা তুলে আনবেন। একই সঙ্গে ঘটে যাওয়া অনাকাক্ষিত ঘটনাগুলোর সঙ্গে দায়ীদের মুখোশ উন্মোচন করা হবে।
জানা গেছে, সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে মামুনুল হক ও জান্নাত আরা ঝর্ণার অবস্থান এবং পরবর্তীতে ঘটে যাওয়া সবগুলো ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। এ জন্য রিসোর্টে মাওলানা মামুনুলের অবস্থানের ভিডিও এবং হেফাজত কর্মীরা তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সম্ভাব্য সবগুলো দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া নানা কথোপকথনও প্রকৃতপক্ষে মাওলানা মামুনুল হকের কি না তাও যাচাই করা হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলছেন, পুলিশের ওপর হামলা, আইন প্রয়োগে বাধাদান, রাস্তায় আগুন, স্থাপনা ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করা হবে। তান্ডবের সঙ্গে যে বা যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, মাওলানা মামুনুল হকের সঙ্গে রয়েল রিসোর্টে থাকা নারীর সাবেক স্বামী হাফেজ শহীদুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। খুলনার সোনাডাঙ্গা গোবরচাকা এলাকা থেকে ডিবি পরিচয়ে তাকে আটক করা হয়। গতকাল সোনাডাঙ্গা তালিমুল মিল্লাত মাদরাসার (খালাসির মাদরাসা) সভাপতি মো. ইমদাদুল হক খালাসি এ তথ্য জানান। হাফেজ শহীদুল ইসলাম ওই মাদরাসার হেফজখানার শিক্ষক ছিলেন।
তালিমুল মিল্লাত মাদরাসার সভাপতি মো. ইমদাদুল হক খালাসি বলেন, গত রবিবার ভোরের দিকে বাড়ি থেকে শহিদুল ইসলামকে আটক করা হয়। এ সময় তার বড় ছেলে হাফেজ আবদুর রহমানকেও তারা নিয়ে যায়। তবে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ বা ডিবি পুলিশ আটকের বিষয়টি স্বীকার করেনি। এদিকে গত দুই দিন ধরে হাফেজ শহীদুল ইসলাম মাদরাসায় অনুপস্থিত রয়েছেন। জানা যায়, মামুনুল হকের সঙ্গে শহীদুল ইসলামের পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। কয়েক বছর আগে এক প্রবাসীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে শহীদুল ইসলাম তার স্ত্রী ঝর্ণা বেগমকে তালাক দেন। এরপর ওই প্রবাসীর সঙ্গেও ঝর্ণা বেগমের সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি। এদিকে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর শহীদুল ইসলাম অন্য এক নারীকে বিয়ে করে সংসার করছেন। ওই বিয়ে হয় খুলনা নগরীর আস্তানা জামে মসজিদে বসে। বিষয়টি নিয়ে গত দুই দিন ধরে এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জন তৈরি হয়েছে।
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, রয়েল রিসোর্টে অবস্থানের সময় মাওলানা মামুনুলের সঙ্গে থাকা নারী প্রকৃতপক্ষেই তার স্ত্রী কি না এখনো বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত হতে কাজ করছে পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার একাধিক টিম। রিসোর্টের রেজিস্ট্রেশন ফরমে মাওলানা মামুনুল হক স্ত্রীর নাম আমিনা তৈয়ব উল্লেখ করা হলেও তার প্রকৃত নাম জান্নাত আরা ঝর্ণা। বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওলিয়ার রহমান। গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানার কামার গ্রামে। তবে গ্রামবাসীদের কেউই ঝর্ণার দ্বিতীয় বিয়ে সম্পর্কে অবহিত নন। খোদ তার বাবাই বলেছেন, নয় বছর বয়সে হাফেজ শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদুল্লাহর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। শহীদের বাড়ি বাগেরহাটের চিতলমারী। ওই সংসারে তার দুই সন্তান রয়েছে। আড়াই বছর আগে তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়।
সূত্র আরও বলছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া কয়েকটি কথোপকথন বিশ্লেষণ করে বুঝা গেছে, মাওলানা মামুনুলের বোন এবং প্রথম স্ত্রী তার দ্বিতীয় বিয়ে সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না। তবে কথোপকথনগুলো প্রকৃতপক্ষেই মাওলানা মামুনুলের কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরপর মামুনুল হক ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, তিনি বিয়ে করেছেন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর স্ত্রীকে। পারিবারিকভাবেই এই বিয়ে হয়েছে।
পরদিন ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি একে একটি মানবিক বিয়ে উল্লেখ করে লেখেন, সেই নারীর সঙ্গে তার স্বামীর ছাড়াছাড়ির আগে তিনি সংসার টেকানোর চেষ্টা করেছেন। ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর মেয়েটি দুর্দশায় পড়ে যায়। সে সময় তিনি বিয়ে করে নিয়েছেন তাকে।
সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র | শনি | রবি |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ||
৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ |
১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ |
২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ |
২৭ | ২৮ |